Friday, February 28, 2020

কেউ কথা রাখেনি - মোকতেল হোসেন মুক্তি

সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত বাংলাদেশে জাতিরজনককে দেশ গড়ার কাজে মাত্র সময় দেয়া হয়েছিল ৩ বছর  ৫ মাস। বঙ্গবন্ধু অনেক স্বপ্ন দেখেছিলেন। এ দেশে সকল বাঙ্গালী উচ্চ শিক্ষা পাবে। গরীব দুখি অন্ন বস্ত্রহীন গৃহহীন চির দুখি বাঙ্গালী বাসস্থান পাবে। হাসবে খেলবে গাইবে । আর কোন ঘরে ভাতের অভাবে মা বাবা তাদের মেয়েদেরকে বিক্রয় করবে না। কোন কৃষক না খেয়ে থাকবে না। প্রতিটি ঘরে ঘরে শিক্ষার আলো জ্বলে উঠবে। বঙ্গবন্ধু সময় চেয়েছিলেন জাতির নিকট।

" আমি তোমাদের কিছুই দিতে পারবো না" আমাকে সময় দিতে হবে-কারো কোন দাবী করা চলবে না, যা' দেবো তাই ভাগ বাটোয়ারা করে অল্পতেই খুশি থাকতে হবে" যেমন তিন বাঙ্গালী জাতির জনক। একটি সংসারের বাবা যেমন নিজের পরিবারের সন্তানদের বলে থাকেন- বেশী দাবী করবো না, যা'দেবো তাই খেয়ে থাকবা, আগামী বছর ফসল হলে ভালো জামা কাপড় দেবো- মেয়ের বিয়ে দেবো ইত্যাদি ইত্যাদি" 

মন্ত্রী পরিষদের কেউ কথা রাখেনি; কোন নেতা মহান স্বাধীনতার সংগঠক কেউ কথা রাখেনি কেবল জাতীয় ৪ নেতা কথা রাখতে গিয়ে জীবন দিয়েছিলেন জেলের বদ্ধ প্রকোষ্ঠে। 

বঙ্গবন্ধু মুক্তিযোদ্ধাদের বলতেন-আমি যতটা তোমাদের নিকট আশা করেছিলাম, তোমরা তার চেয়ে বেশী করে ফেলেছ, আমি তোমাদের নিকট চির ঋণী হয়ে থাকবো এ কারনে যে মাত্র ৯ মাসে তোমরা দেশ স্বাধীনই করোনি আমাকে পাকিস্তানের জেল থেকে মুক্তি করার পথ কুসুমাস্তীর্ণ করে দিয়েছ। তোমাদেরকেও বলি- আমায় সময় দিতে হবে- সকলে অস্ত্র জমা দাও, নিজের পূর্বের যার যার পেশায় ফিরে যাও, আত্মীয় পরিজন মা বাবা ভাই বোন ও নিজের সন্তানদের নিয়ে কিভাবে বেচে থাকা যায় সেদিকে মনোনিবেশ করো" 

সবাই কথা দিয়েছিল। কেউ কথা রাখেনি। কোন কোন কমান্ডার নিজের অস্ত্রের বলে ক্ষমতার বলে অনেক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা তৈরীকরে কামিয়ে নিয়েছে লক্ষ কোটি টাকা। কেউ কেউ করেছে ডাকাতি; কেউ কেউ করেছে লুটপাট এবং এদের পিছনের শক্তি ছিল ঐ সময়ের অনেক ছাত্র নেতা আওয়ামী লীগ নেতা সাংসদ এবং স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারগণ। 

১৯৭৪ সালে দুর্ভিক্ষ দেখা দিল। বাস বঙ্গবন্ধুর অস্তিত্বকে চির তরে ধংস করার পথ খুজে পেল বাংলার গ্রামে গঞ্জে এখানে সেখানে লুকিয়ে থাকা স্বাধীনতা বিরোধীশক্তি। অন্যদিকে পাকিস্তান আই এস আইও গোপন চক্রান্তের ফাঁদে ফেলার অভিসন্ধিতে সফল হল। পেয়ে গেল খন্দকার মোস্তাক আহমেদ, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, তাহের উদ্দিন ঠাকুর কে এম ওবায়দুর রহমান এবং অস্ত্রধারী খুনি মেজর জিয়াউর রহমানকে।  


No comments:

Post a Comment